প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছ বাংলাদেশে: ইউএনএইচসিআর
গত আট দিনে মিয়ানমার থেকে প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে—। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
গতকাল জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
এসব শরণার্থীর মধ্যে প্রায় সবাই রোহিঙ্গা মুসলিম বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে বলা হয় মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে এসব মানুষ পালিয়ে এসেছে।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ভিভয়ান ট্যান বলেন, এ পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে আসা মানুষের আনুমানিক সংখ্যা ৫৮ হাজার ৬০০। এ সংখ্যা ক্রমে বাড়ছেই।
ইউএনএইচসিআরের ঢাকা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা রাতে বলেন, আমরা যে সংখ্যা বলছি, তা অনুমিত—সীমান্ত এলাকায় কাজ করা বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছে থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সীমান্তবর্তী কয়েকটি চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চৌকি পুড়িয়ে দেয়া হয়। ওই দিনই জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব এক তদন্ত প্রতিবেদন দেন। ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের পৃথক জাতিসত্তার স্বীকৃতি দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, এ হামলার জন্য মিয়ানমারের সরকার স্থানীয় আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মিকে (এআরএসএ-আরসা) দায়ী করে। এরপর থেকে রোহিঙ্গা জনপদ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটতে থাকে। রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যার অভিযোগও করেছেন বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অনেক রোহিঙ্গা।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত আরাকানে অন্তত ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন, ১১ হাজার ৭০০ ‘জাতিগত অধিবাসী’ তাদের বাসস্থান ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার উপগ্রহ চিত্র পাওয়া গেছে।
উল্লেখ, গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নাফ নদী ও স্থল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশ অংশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষীদের ওপর গুলি চালায় তারা।